Monday, July 23, 2012

নদী আর সবুজের ছোঁয়া পাবেন পিরোজপুরে



স্বরূপকাঠির ব্র্যান্ডঃ পেয়ারা

‘‘ফিরোজ শাহের আমল থেকে ভাটির দেশের ফিরোজপুর
বেনিয়া চক্রের ছোঁয়াচ লেগে পাল্টে হলো পিরোজপুর’’।


সুন্দরবনের কোলঘেঁষা কালীগঙ্গা, বলেশ্বর, দামোদর, সন্ধ্যানদী বিধৌত প্রাকৃতিক সবুজের লীলাভূমি পিরোজপুর জেলা। পিরোজপুর জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের বরিশাল বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। পিরোজপুর জেলা ৭টি উপজেলায় বিভক্ত। এগুলো হলো: কাউখালী, নাজিরপুর, নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠি), পিরোজপুর সদর, ভাণ্ডারিয়া, মঠবাড়িয়া, জিয়ানগর।




ষ্টীমারে করে আসতে পারেন পিরোজপুরে

হুলারহাটের মাইল চারেক দূরে পিরোজপুর শহর। এরই পশ্চিম দিক থেকে বয়ে গেছে বলেশ্বর নদী। বেড়ানোর জন্য পিরোজপুর বেশ আকর্ষণীয়। বহু স্মৃতিবিজড়িত শহর এই পিরোজপুর।


রায়েরকাঠী জমিদার বাড়িঃ


রায়েরকাঠী জমিদার বাড়ীর পুরাতন মঠ




রায়েরকাঠী জমিদার বাড়ীর পুরাতন মঠ


পিরোজপুর শহরের কাছে পিঠে রায়েরকাঠি জমিদার বাড়ি। প্রায় সাড়ে তিনশত বছর আগে এখানে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিলো এক ঐতিহাসিক জমিদার বংশ। পিচঢালা পথ ধরে হেঁটে কিংবা রিকশায় ওখানে যাওয়া যায়। রায়েরকাঠি জমিদার বাড়ি স্মরণ করিয়ে দেবে নানা স্মৃতি। এই জমিদার বাড়িতে নির্মিত হয় রাজভবন, নহবৎখানা, অতিথিশালা, নাট্যশালা এবং অসংখ্য মন্দির। রাজবাড়ীতে ছিলো ছোট বড় প্রায় দু’শ অট্টালিকা। তন্মধ্যে ৪০ বা ৫০টি গণচুম্বী অট্টালিকা রাজবাড়ির শোভর্ধন করতো। এখানে রয়েছে প্রায় ২৫ মন ওজনের শিব লিঙ্গ। এটি উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ শিবলিঙ্গ। তবে এখন এখানে গেলে দেখা মিলবে কয়েকটি মন্দির আর মঠ। ধূসর স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছে রায়েরকাঠি জমিদার বাড়ি। মোগল সম্রাট জাহাঙ্গীরের আমলে ১৬২০ সালে জমিদার বংশের গোড়াপত্তন হয় এখানে। অমরেন্দ্র রায় চৌধুরী ছিলেন শেষ জমিদার।

মঠবাড়িয়ার সাপলেজা কুঠিরবাড়িঃ
প্রায় দুইশত বছর আগে ইংরেজ সাহেব এডওয়ার্ড পেরি ক্যাসপার মঠবাড়িয়ায় এলে অত্র এলাকার ধনাঢ্য ফরাজউল্লাহ তাকে ১৪ বিঘা জমি দান করেন। সেই ১৪ বিঘা জমিতে কুঠিবাড়ি নির্মিত হয়। প্রতি বছর পৌষ মাসের শেষদিকে কুঠিরবাড়িতে পূণ্যাহ উৎসব হতো। তখন প্রজারা মেতে উঠতো উৎসবে। ১৯৪৭ এর ভারত বিভক্তির সময়ই ব্রিটিশরা কুঠিবাড়ি থেকে চলে যায়। ক্যাসপার সাহেব চলে যাওয়ার আগে সাপলেজা এলাকার গ্রামের নাম তার পিতা শিলার সাহেবের নামে নামকরণ করে যান।

পিরোজপুরের প্রাচীন মসজিদঃ
পিরোজপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদটি আজ থেকে প্রায় ২শত ২০ বছর পূর্বে স্থাপিত হয়। ১৮৮২ সালে ভারতবর্ষের উত্তর প্রদেশের হাফেজ মোহাম্মদ সোলায়মান এই মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। শহরের প্রাণকেন্দ্রে প্রায় ২০ শতাংশ জমি ক্রয় করে গোলপাতার ছাউনী দিয়ে মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছিল। গোলপাতার তৈরি মসজিদটি ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের আপ্রাণ চেষ্টায় ও আর্থিক সাহায্যে ১৮৯৪ সালের দিকে পর্যায়ক্রমে দালানে উন্নীত হয়। ইয়াসিন সর্দার নামক এক ব্যক্তির কবর এখনও মসজিদের ভিতরে অবস্থিত। তিনি এই মসজিদের অন্যতম একজন খাদেম ছিলেন।

মঠবাড়িয়ার মমিন মসজিদঃ
মঠবাড়িয়া উপজেলার সর্ব উত্তর দিকে বুড়িরচর গ্রামে অবস্থিত আকন বাড়ি। দুশো বছরের পুরানো এই ঐতিহ্যবাহী বাড়ির সামনের উঠোনে প্রায় শতবর্ষীয় ঐতিহ্যবাহী মমিন মসজিদ। সম্পূর্ণ কাঠের কারুকাজ দিয়ে তৈরি এই মসজিদটি শিল্পকল্পে এক অপূর্ব নিদর্শন যা ইন্দো-পারসিক আর ইউরোপীয় ধারায় স্থপতির নিজস্ব মৌলিক উৎকর্ষের মিশ্রণে তৈরি এক নতুন স্থাপত্য। শিল্পকর্ম হিসেবে মসজিদটি বাংলাদেশে অদ্বিতীয়। তাই এটি সংরক্ষণের জন্য সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ১৭ এপ্রিল ২০০৩ তারিখের প্রজ্ঞাপনমূলে ‘‘সংরক্ষিত প্রত্ন সম্পদ’’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে তাদের তালিকাভুক্ত করেছে।

শ্রীরামকাঠী প্রণব মঠ সেবাশ্রমঃ
পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার কালীগঙ্গা নদীর অববাহিকায় দেবদুয়ার মোহনার নিকটে শ্রীরামকাঠী বাজার সংলগ্ন ভীমকাঠী গ্রামে এ মঠের অবস্থান বরিশাল জেলার ধলহার গ্রামে শরৎ চন্দ্র মিত্রের পিতৃভূমি ছিল। তিনি শ্রীরামকাঠীতে ডিসপেনসারি খুলে ডাক্তারী পেশায় নিয়োজিত হলে শ্রীরামকাঠীর বাসিন্দা হয়ে যান। হিন্দু ধর্ম চর্চার ক্ষেত্রে শ্রীমৎ স্বামী প্রণবানন্দজী নামে তিনি অভিহিত। তিন বিঘা জমির উপর শ্রীরামকাঠী প্রণবমঠ সেবাশ্রম স্থাপিত।

মাঝের চর মঠবাড়ীয়া :
উপজেলা সদর থেকে ১৫ কিঃমিঃ দক্ষিণ পশ্চিমে বলেশ্বর নদীর মধ্যবর্তী স্থানে ৫০ বছর পূর্বে জেগে ওঠা ১২ একর আয়তনের একটি চর। বিগত ১৫ নভেম্বর, ২০০৭ সালে সংগঠিত সিডর পরবর্তীকালে ব্রিটিশ ডিউক অব গ্লুচেষ্টার সেখানে একটি পযর্টন স্পট গড়ে তোলে।

পারেড় হাট জমিদার বাড়ী :
জিয়ানগর উপজেলায় পিরোজপুর শহর থেকে ১৮ কিঃমিঃ দূরে জমিদার সূর্য বাহাদুর বাজপেয়ী-এর পুরাতন জমিদার বাড়ী। জনশ্রুতি আছে যে, সূর্য বাহাদুর বাজপেয়ী ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী-এর পূর্ব পুরুষ।

বর্তমানে পিরোজপুর শহর অনেক বড় হয়ে গেছে। নতুন যারা এখানে বেড়াতে আসবেন রিকশা নিয়ে তারা ঘুরে দেখবেন ছায়াঢাকা-মায়ামাখা পিরোজপুর শহরখানি। সর্বত্রই সবুজে ছাওয়া। তখন হয়তো আপনার হৃদয়ে ভেসে উঠবে কবিগুরুর লেখা ‘এ কি এ সুন্দর শোভা! কী মুখ হেরি এ! আজি মোর ঘরে আইল হৃদয়নাথ, প্রেম-উৎস উথলিল আজি॥ বলো হে প্রেমময় হৃদয়ের স্বামী, কী ধন তোমারে দিব উপহার। হৃদয়-প্রাণ লহো লহো তুমি কী বলিব যাহা কিছু আছে মম সকলই লও হে নাথ’ কবিতার এই চরণগুলো।

এখানে বলেশ্বরের তীরে রয়েছে বহু বাড়িঘর। নদীর ওপর ব্রিজ, সদর রাস্তা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। মসজিদ, মন্দির, রামকৃষ্ণ মিশন, মঠ, কালীবাড়ি, রিজার্ভ পুকুর, ডিসি পার্ক, রাজারহাট, কুমারখালী, শঙ্করপাশা, বিশ্বরোড, সিঙ্গাপুরী শামীদের বাড়ি, আফজাল মিয়ার বাড়ি, চৌধুরী বাড়ি এখানের অন্যতম আকর্ষণ।

পিরোজপুর সরকারি উচ্চ বালক বিদ্যালয়ের কাছে এসে দাঁড়ালে টিনশেড ভবনের কথা মনে পড়বেই। টিনশেড ভবনে একদা লেখাপড়া করেছিলেন বাংলার আধুনিক কবি আহসান হাবিব। তার কথা মনে হলে ইচ্ছে জাগবে শঙ্করপাশায় যাওয়ার। কবি আহসান হাবিবের জন্মস্থন তো শঙ্করপাশায়। রিকশা নিয়ে ওই পথে গিয়ে শুনবেন ‘বউ কথা কও’ পাখির ডাক। পিরোজপুর থেকে রিকশায় শঙ্করপাশায় যেতে ২৫ মিনিট সময় লাগবে।

রিকশা নিয়ে যদি পারেরহাটে চলে যান তখন দেখবেন নদী। তখন আবারও মনে পড়বে কবি আহসান হাবিবের কথা। তিনিই তো লিখেছিলেন ‘এই যে নদী/নদীর জোয়ার/নৌকা সারে সারে/একলা বসে আপন মনে/ বসে নদীর ধারে/এই ছবিটি চেনা’ কবিতার এই লাইনগুলো।

পিরোজপুরে সাংস্কৃতিক উৎসব আজও হয়। কিন্তু যে বালকটির বয়স আজ ষাট, তিনি তো অতীত ভুলে যাননি এখনও। পিরোজপুরের কেউ বেড়াতে এলে তিনি গাইড হয়ে অকপটে বলে যান কণ্ঠশিল্পী ক্ষমাদাশ গুপ্তার কথা। ‘আমারও দেশের মাটির গন্ধে ভরিয়াছে সারাময়’এ গান গেয়ে তিনি সারা শহর মাতিয়েছিলেন। তা কি ভোলার! সে তো প্রায় ৫০ বছর আগেকার কথা।




কচা নদীর সূর্যাস্ত এইরকমই সুন্দর...


পিরোজপুরে যে ক’দিন থাকুন না কেন, ভুলে যাবেন না আশপাশের গাঁও-গেরাম দেখতে। কচা নদীর অববাহিকায় বেশ বড় গ্রাম পাঙ্গাশিয়া। এখানে এসে সবুজ গাছ-গাছালির সৌন্দর্য উপভোগ করুন। দেখা মিলবে নাানা প্রজাতির পাখ-পাখালির। গ্রামবাসীর সঙ্গে তাদের দৈনন্দিন কাজেও ইচ্ছা হলে হাত লাগাতে পারেন। আপনি যদি চিকিৎসক কিংবা শিক্ষক হন অথবা শিল্প অনুরাগী হন তাহলে চাদের স্কুলে গিয়ে তাদের হেলথ চেকআপ বা পড়ানো অথবা শিল্প সৃষ্টিতে মেতে উঠতে পারেন।







এখনও পালতোলা নৌকা দেখবেন


পিরোজপুরের ভাষা ও সংস্কৃতির ইতিহাস বেশ প্রাচীন এবং সমৃদ্ধ। বরিশাল ও খুলনার মাঝখানে অবস্থিত হওয়ায় এই দুই অঞ্চলের ভাষার দ্যোতনা পরিলক্ষিত হয় পিরোজপুরের ভাষায়। তবে পিরোজপুরের কোন আঞ্চলিক ভাষা নেই, নেই কোন বিশেষ ভাষা-ভাষী গোষ্ঠী। ১৭শ ও ১৮শ শতকে বাকলার পান্ডিত্য গৌরব সমগ্র ভারতে প্রসিদ্ধি লাভ করে। এ জেলার প্রখ্যাত কবিদের মধ্যে আহসান হাবীব, আবুল হাসান, ক্ষেত্রগুপ্ত, বিশ্বজিৎ ঘোষ, মুহম্মদ হাবিবুর রহমান, এমদাদ আলী ফিরোজী, এম এ বারী,শেখ শহীদুল ইসলাম, খান মোহাম্মদ মোসলেহ্ উদ্দিনের নাম স্ব-মহিমায় দোদীপ্যমান। প্রবাদ প্রবচন ও বিয়ের গানের জন্য পিরোজপুর বিখ্যাত। বর্তমানে উদীচি শিল্পী গোষ্ঠী, দিশারী শিল্পী গোষ্ঠী,সংগীতা, ধ্বনি শিল্পী গোষ্ঠী, রুপান্তর নাট্য গোষ্ঠী, পিরোজপুর থিয়েটার, কৃষ্ণচুড়া থিয়েটার, বলাকা নাট্যম্ প্রভৃতি সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী আঞ্চলিক ঐতিহ্য লালন পালন ও প্রচারে একাগ্র প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। পিরোজপুর অফিসার্স ক্লাব, গোপাল কৃষ্ণ টাউন ক্লাব, বলাকা ক্লাব সহ প্রভৃতি অংগ সংগঠন ভাষা ও সংস্কৃতির অগ্রযাত্রায় বিশেষ ভুমিকা রাখছে।








প্রায় প্রতিটা রাস্তার পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে খাল... আর খালে চলছে নৌকা...

হুলারহাটের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে বিশাল কচা নদী। এর ওপারেই পাঙ্গাশিয়া গাঁওখানি। এখানেই পুকুর-দীঘি, সবুজ প্রান্তর সবই চোখে পড়বে। নদীতীরে মহিষ চড়ে বেড়ানো, রাখালের হাতে বাঁশি, ঘুঘুর ডাক শুনে সবুজ মাঠের দিকে পা বাড়ান। দেখবেন তখন প্রাণভরে নিঃশ্বাস নেয়ার সুযোগটুকু পাবেন। তখন মনে হবে পিরোজপুর বেড়ানো যে সফল হলো!


বিসমিল্লাহ চত্বরঃ ভাণ্ডরিয়া

ধানবীজের বাজার
ভাসমান সবজি বাগানও দেখতে পাবেন
ইকো পার্ক


বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব
খান বাহাদুর হাশেম আলী খান (বাংলার নির্যাতিত কৃষক সমাজের জনদরদী ও সংগ্রামী নেতা)
তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া (ইত্তেফাক পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা)
কবি আহসান হাবীব (স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক, বাংলা একাডেমী পদক প্রাপ্ত)
বেগম মতিয়া চৌধুরী (বর্তমান কৃষি মন্ত্রী)
মেজর জিয়াউদ্দিন আহমদ (নবম সেক্টরের সাব- সেক্টর কমান্ডার)
আনোয়ার হোসেন মঞ্জু (সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী)
মইনুল হোসেন (সাবেক উপদেষ্টা)
নূর হোসেন (খালি গায়ে ও পিঠে স্বৈরাচার নিপাত যাক গণতন্ত্র মুক্তি পাক লিখে মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন)
মেজর (অবঃ) মেহেদী আলী ইমাম বীরবিক্রম (স্বাধীনতাযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য তাঁকে বীরবিক্রম উপাধিতে ভূষিত করে)
মোস্তফা জামাল হায়দার (সাবেক মন্ত্রী)
জুয়েল আইচ (আন্তর্জাতিক যাদুশিল্পী)
খালিদ হাসান মিলু (জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত রেডিও, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র কণ্ঠশিল্পী)
দিলীপ বিশ্বাস (জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত বিশিষ্ট চলচ্চিত্র পরিচালক)
শাহরিয়ার নাফিস (জাতীয় ক্রিকেটার)


যাতায়াত ব্যবস্থা :
নদ-নদী বেষ্টিত জেলার প্রধান যাতায়াত ব্যবস্থা নৌ-পথ এছাড়া সড়কপথেও যাতায়াতের ব্যবস্থা রয়েছে

নদী পথ:
ঢাকার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন একাধিক যাত্রীবাহী লঞ্চ ছেড়ে যায় সড়কপথের তুলনায় নদীপথে লঞ্চে যাতায়াত আরামদায়ক প্রতিদিন সন্ধ্যা :০০ টা থেকে শুরু করে রাত :৩০ টা পর্যন্ত লঞ্চগুলো ছেড়ে যায় পরদিন সকাল :০০ টা থেকে ১০:০০ টার মধ্যে লঞ্চগুলো পিরোজপুর গিয়ে পৌছায় পিরোজপুর হুলারহাট নামক ঘাটে নেমে ঘাট থেকে রিক্সা (ভাড়া ৩০-৫০ টাকা), ভ্যান (ভাড়া ২০-৩০ টাকা) টেম্পুযোগে (ভাড়া ২০-৩০ টাকা) পিরোজপুর শহরে যাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে

লঞ্চের ভাড়া :
ডেক ১৮০২২০ টাকা
সিঙ্গেল কেবিন ৮০০,০০০ টাকা
ডাবল কেবিন ,৬০০,০০০ টাকা

রকেট সার্ভিস:
সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে ব্যক্তিমালিকানাধীন লঞ্চের পাশাপাশি বিআইডব্লিউটিএ- রকেটও ঢাকা-পিরোজপুর রুটে চলাচল করে লঞ্চের তুলনায় রকেটে যাতায়াত কিছুটা আরামদায়ক সরকারী ছুটির দিন ব্যতীত সপ্তাহের দিন রকেট চলাচল করে প্রতিদিন সন্ধ্যা :৩০০ টায় সদরঘাট থেকে ছেড়ে গিয়ে পরদিন সকাল :০০ টা থেকে ১০:০০ টার মধ্যে পিরোজপুরের হুলারহাট ঘাটে গিয়ে পৌছায়

রকেটের ভাড়া :
ডেক ১২০ টাকা
সিঙ্গেল কেবিন ,০০০,৪০০ টাকা
ডাবল কেবিন ,০০০,৫০০ টাকা

টিকিট সংগ্রহ:
লঞ্চের কেবিনে ভ্রমনের জন্য আগে থেকে কেবিন বুকিং দিতে হয় না হলে অনেক সময় কেবিন পাওয়া যায়
সরাসরি বা ফোনের মাধ্যমে কেবিন বুকিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে তবে অগ্রীম বুকিংয়ের ক্ষেত্রে লঞ্চ ছাড়ার - ঘন্টা আগে লঞ্চে উপস্থিত হয়ে বুকিং নিশ্চিত করতে হয়কোন কারণে বুকিং বাতিল করতে চাইলে লঞ্চ কর্তৃপক্ষকে লঞ্চ ছাড়ার কমপক্ষে দুঘন্টা আগে জানাতে হবে

মালামালের ভাড়া:
একজন যাত্রী সর্বোচ্চ ২০ কেজি পর্যন্ত মালামাল বহন করতে পারে যা টিকেটের অন্তর্ভূক্ত অতিরিক্ত মালামালের জন্য অতিরিক্ত চার্জ প্রদান করতে হয়

সড়কপথ :
সড়কপথে ঢাকা থেকে পিরোজপুর যাওয়ার পথে মাঝপথে বৃহত্তর পদ্মা নদীর অবস্থান হওয়ার কারণে ঢাকা থেকে সরাসরি পিরোজপুরের কোনো বাস যোগাযোগ নেই ফেরি পারাপার সার্ভিসের পাশাপাশি লঞ্চ বা স্টিডবোটের মাধ্যমে নদী পারাপারের মাধ্যমে পিরোজপুর যাওয়া যায়

ফেরি পারাপার
ঢাকার সায়েদাবাদ গাবতলী উভয় বাস টার্মিনাল থেকেই ঢাকা-পিরোজপুর রুটের ফেরি পারাপার গাড়ি রয়েছে সায়েদাবাদ থেকে ছেড়ে যাওয়া বাসগুলো মাওয়া সংলগ্ন পদ্মা নদী পার হয়ে পিরোজপুর যাতায়াত করে আর গাবতলী থেকে ছেড়ে যাওয়া বাসগুলো আরিচা সংলগ্ন পদ্মা নদী পার হয়ে পিরোজপুর রুটে চলাচল করে 

ঢাকা-পিরোজপুর রুটে চলাচলকারী বাস সার্ভিস গুলোর মধ্যে রয়েছে
প্রিন্স এক্সক্লুসিভ: ০১৭১০-৮২৯৭৭০
পর্যটক পরিবহন: ০১৭৪৬৪৮৭১৮১,০১৭১৯৮১৩০০৪,০১৭১২২৮১৬০১
সার্বিক পরিবহন: ০১৭২১০৫৯৫৮১,০১৭২৪৮৪৬২৪৩
দোলা পরিবহন: ০২-৭৫৪২৮৮১,০১১৯৯০৩০১৮১,০১৫৫২৪৬২৮৫২
হামিম পরিবহন: ০১৭১৬৮৯৫৩২১,০১৮১৯৯৫৪৪৯৫
সেীদিয়া পরিবহন: ০১৯১৯৬৫৪৯২৬-৩৩

এছাড়া লোকাল বাস যোগে মাওয়া হয়ে সড়কপথে পিরোজপুর যাওয়া যায় ঢাকার গুলিস্তান যাত্রাবাড়ী বাসস্ট্যান্ড থেকে মাওয়ার বাসগুলো প্রতি ১৫ মিনিট পরপর ছেড়ে যায় ঢাকামাওয়া রুটের যাত্রাবাহী উল্লেখযোগ্য বাসগুলোর মধ্যে রয়েছে-

বিআরটিসি
ইলিশ পরিবহন
আনন্দ পরিবহন
গাংচিল পরিবহন
গ্রেট বিক্রমপুর পরিবহন
গোধুলী পরিবহন


এসকল পরিবহনের বাসগুলো ঢাকামাওয়া রুটে কাউন্টার ভিত্তিতে সরাসরি চলাচল করে উপরোক্ত বাসগুলো ছাড়া ভুলেও কোনো লোকাল বাসে উঠবেন না তাহলে আপনার যাত্রা বিরক্তিকর হয়ে উঠবে গুলিস্তান সুন্দরবন স্কয়ারের পূর্ব পাশ থেকে এবং যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তার দক্ষিণ-পূর্ব পাশ থেকে মাওয়ার বাসগুলো ছেড়ে যায় ঢাকা থেকে মাওয়ার ভাড়া জনপ্রতি ৬০ টাকা

মাওয়া থেকে লঞ্চ, ইঞ্জিন চালিত ট্রলার স্পিডবোট যোগে নদী পারাপারের ব্যবস্থা আছে তেমন কোনো তাড়া না থাকলে লঞ্চে যাতায়াতই সবচেয়ে বেশি নিরাপদ লঞ্চযোগে মাওয়া থেকে কাওরাকান্দি যেতে সময় লাগে ঘন্টা থেকে ঘন্টা ২০ মিনিট ভাড়া জনপ্রতি ঘাটে দিতে হয় টাকা এবং লঞ্চ ভাড়া ২০ টাকা স্পিডবোটে নদী পার হতে সময় লাগে ২০ থেকে ২৫ মিনিট ভাড়া জনপ্রতি ১৫০ টাকা তবে লঞ্চঘাট থেকে লঞ্চে উঠার সময় একটু জেনে নিবেন আপনি যেই লঞ্চে উঠছেন সেটি কাওড়াকান্দি ঘাটের লঞ্চ কিনা কেননা একই লঞ্চ ঘাট থেকে মাঝিরঘাট রুটের লঞ্চও ছাড়ে তাই আপনি যদি অসর্তকতাবশত ভুল লঞ্চে উঠে পড়েন তাহলে আপনার সময় অর্থ দুই- নষ্ট হবে কাওড়াকান্দি ঘাট থেকে সরাসরি পিরোজপুরের মাইক্রোবাস পাওয়া যায়

থাকার ব্যবস্থা

হোটেল রজনী, ক্লাব রোড়: ০১৭১২৫৬২২৪১
হোটেল রিল্যাক্স, হাসপাতাল রোড: ০৪৬১-৬২৮০৭
হোটেল ডালাস, থানা রোড: ০৪৬১-৬২৮৫৫
হোটেল বলাকা, ব্রীজ রোড: ০৪৬১-৬২৭১০
হোটেল অবকাশ, থানা রোড: ০৪৬১-৬২৩৩৩
হোটেল বিলাস, ক্লাব রোড: ০৪৬১-৬২৫৯৪
হোটেল রয়্যাল, কলেজ রোড: ০১৭১২৯৪৪৩৩৫
হোটেল ছায়ানীড়, বাজার রোড: ০৪৬১-৬২৩৮১
হোটেল সিনথিয়া, কাপুড়িয়া পট্টি: ০৪৬১-৬৩২৬২
হোটেল আল মদীনা, ইন্দেরহাট বন্দর, নেছারাবাদ:০১৭১২৫১৯০০৯


কত টাকা খরচ হবে : ৩ থেকে ৪ দিন সময় হাতে নিয়ে যাবেন। তাহলে ভ্রমণের দিনগুলো হবে আনন্দের। এ ভ্রমণে জনপ্রতি ৩ হাজার টাকা নিয়ে গেলেই চলবে।
সংগৃহীত

No comments:

Post a Comment

Followers

ছোট্ট একটি আইডিয়া আপনাকে কোটিপতি করে দিতে পারে !!!

এক লোক লেটেস্ট মডেলের একটা গাড়ি চালিয়ে দুর্গম এক এলাকা দিয়ে যাচ্ছিল। হঠাত তার গাড়ি নষ্ট হয়ে গেল। সে খুব চেষ্টা করল কিন্তু গাড়ি ঠিক করতে পারল না। ঠিক তখন কাছাকাছি একটা গ্যারেজ তার নজরে পড়ল। সেখানে খুব সাদামাটা এক মেকানিক পাওয়া গেল। গাড়িওয়ালা তাকে জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি কি আমার গাড়িটা ঠিক করতে পারবে?” মেকানিক গাড়ির ইঞ্জিন কভার তুলে বলল, “পাড়ব।” তারপর মেকানিক তার হাতুড়ি দিয়ে একটা স্ক্রুর উপর গুনে গুনে ৬টা বাড়ি মেরে গাড়িওয়ালাকে বলল, “দেখেন, ঠিক হয়েছে কিনা?” গাড়িওয়ালা অবিশ্বাসের চোখে মেকানিকের দিকে তাকাল। তারপর স্টার্ট দিয়ে দেখল, গাড়ি ঠিক হয়ে গেছে।

গাড়িওয়ালার চোখে – মুখে বিস্ময়! বললেন, “মজুরী কত?”

মেকানিক বলল, “১০০ ডলার।”

“৬টা বাড়ির জন্য ১০০ ডলার! এটা তো ১ ডলারের বেশি হবার কথা না। তোমার মাথা ঠিক আছে?”

“হ্যাঁ স্যার, ৬টা বাড়ির জন্য ১ ডলারের বেশি হবার কথা না। বাকি ৯৯ ডলার হল কোন জায়গাতে বাড়ি মারলে আপনার গাড়ি স্টার্ট নিবে সেটা বুজতে পারার জন্য, জানার জন্য।”

ঠিক উপরের গল্পের মত আমি আপনাকে এমন একটি আইডিয়া দিতে পারি যার মাধ্যমে এককালীন মাত্র–

· => ৭৫,০০০ টাকা বিনিয়োগ করে ২৫ বছরে ন্যূনতম ১ কোটি টাকার মালিক হতে পারেন

· => ১৫০,০০০ টাকা বিনিয়োগ করে ২০ বছরে ন্যূনতম ১ কোটি টাকার মালিক হতে পারেন

· => ৪০০,০০০ টাকা বিনিয়োগ করে ১৫ বছরে ন্যূনতম ১ কোটি টাকার মালিক হতে পারেন

আমি আপনাকে কোন এমএলএম কোম্পানিতে কিংবা জমিতে বিনিয়োগ করতে কিংবা আমাকে টাকা দিতে বলব না কিংবা আপনার টাকা নিয়ে কেউ উধাও হয়ে যাবে এমন কোথাও বিনিয়োগ করতে বলব না। আমি শুধু আপনাকে পথ দেখিয়ে দিব যে কোথায় আপনাকে বিনিয়োগ করতে হবে? কিভাবে বিনিয়োগ করতে হবে? শুধু বিনিয়োগের আইডিয়াটা আপনাকে দিব। বাদবাকি কাজ আপনিই করতে পারবেন। আইডিয়াটা জানার পর আপনি নিজেই বলবেন যে, “হ্যাঁ এটা আসলেই সম্ভব!” আমার আইডিয়া ব্যবহার করতে আপনাকে দিনে ১ মিনিটও সময় দিতে হবে না।

আপনি যদি কোটি টাকার মালিক হতে চান তাহলে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

আমার আইডিয়া ব্যবহার করে আপনি যে নির্ধারিত বছরে ন্যূনতম ১ কোটি টাকার মালিক ইনশাল্লাহ হবেন সে সম্পর্কে সাহস নিয়ে আমি বলছি, আমি ১০০ টাকার ননজুডিসারি স্ট্যাম্পে লিখিত দিব, আমি এতটাই নিশ্চিত!

আপনি ঠকবেন না।

আপনার যে যোগ্যতা থাকতে হবেঃ ধৈর্য, ব্যাংক ইন্টারেস্ট সম্পর্কে সাধারন জ্ঞান, বয়স ন্যূনতম ২০ বছর, শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম ডিগ্রী স্টুডেন্ট আর সাহস করে কিছু করে ফেলার মানসিকতা যদি আপনার থেকে থাকে তাহলে এই আইডিয়া আপনার জন্য। কি সাহস আছে?

যোগাযোগঃ

Muhmmad Anwarul Hoque Khan

Email: mahkbd@gmail.com

Linkedin: http://bd.linkedin.com/pub/muhammad-anwarul-hoq-khan/33/503/657


আমি আমার পুরো প্রোফাইল আপনাদের দিয়ে দিলাম। মনে রাখবেন, সৎ ভাবে দ্রুত বড়লোক হবার কোন পথ নাই। আমার আইডিয়া অনুযায়ী আপনার দরকার হবে শুধু ধৈর্য আর কিছুই না।