বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবাল। এই জনপ্রিয়তা শুধু ছোটদের কাছে নয়, বড়দের কাছেও। বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী তিনি পেঁৗছে দিয়েছেন বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে। বিজ্ঞান ও গণিতের মতো বিষয়কে অত্যন্ত
সহজ ও বুদ্ধিদীপ্তভাবে তিনি তুলে ধরেন তাঁর লেখায়। কলামিস্ট হিসেবে তাঁর জনপ্রিয়তাও কোনো অংশে কম নয়। তিনি অধ্যাপনা করছেন শাহজালাল বিজ্ঞান
ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে, কম্পিউটার
বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগে। সাহসী
এবং নিরাসক্ত শিক্ষক হিসেবে তাঁর অন্য রকম গ্রহণযোগ্যতা আছে। ঠিক যে মুহূর্তে দেশের সামনে নেতৃত্ব সংকট, জাতির সামনে আদর্শ সংকট আর ব্যক্তির
সামনে অস্তিত্ব সংকট চলছে, তখন
তিনি ছাত্র ও শিক্ষকদের কাছে হয়ে ওঠেন অন্যতম আদর্শ।
প্রগতিশীল এই লেখকের মুক্তিযুদ্ধকে ঘিরে দায়িত্বশীল কর্মকাণ্ড, বিভিন্ন সংকটে জাতির গঠনমূলক আলোচনা-সমালোচনা, বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে
দায়িত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ ইত্যাদি দেশবাসীর কাছে তাঁকে করে তুলেছে অন্যতম গ্রহণযোগ্য
ব্যক্তিত্ব। তাঁর বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ
ছিলেন পুলিশ অফিসার। লেখালেখির
চর্চা তাঁর ছিল। ছিল সাহিত্যের প্রতি গভীর
অনুরাগ। তরুণদের লেখালেখির ব্যাপারেও
তিনি খোঁজখবর রাখতেন। মুহম্মদ জাফর
ইকবালের লেখক হওয়ার পেছনে তাঁর বাবার উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা ছিল প্রবল। একই রকম অনুপ্রেরণা ছিল পরিবারের
অন্যদের প্রতিও। বাবার পুলিশের চাকরির সুবাদে
পরিবারের সঙ্গে তাঁকে ঘুরে বেড়াতে হয়েছে সারা দেশ। ১৯৭১ সালে তাঁর বাবা শহীদ হন। বাবার মৃত্যুর স্মৃতি কষ্ট দিলেও একজন শহীদের সন্তান হিসেবে গর্ব
বোধ করেন তিনি।
জাফর ইকবাল লেখা শুরু করেন মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে। দুঃখ-আনন্দ মেশানো, স্বপ্ন অধ্যুষিত অথচ বিপর্যস্ত এক
প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে। কেননা, সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ তখন লড়ছে
ক্ষুধা, দারিদ্র্য আর
অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য। তাঁর লেখা
প্রথম প্রকাশিত হয় 'বিচিত্রা'য়। সেটি ছিল একটি ছোটগল্প_'কপোট্রনিক ভালোবাসা' নামে। তাঁর
লেখা পড়ে মুগ্ধ হন শহীদ জননী জাহানারা ইমাম ও কবি-কথাসাহিত্যিক আহমদ ছফার মতো
ব্যক্তিত্ব।
মুহম্মদ জাফর ইকবালের 'ছেলেমানুষি' বা 'একজন দুর্বল মানুষ'-এর মতো ছোটগল্প ও 'দীপু নাম্বার টু', 'আমার বন্ধু রাশেদ-এর মতো মর্মস্পর্শী কিশোর উপন্যাস
বাংলা সাহিত্যে খুব কমই আছে। এ
দেশের পাঠকের মনন গড়তে তাঁর ভূমিকা অকল্পনীয়। বাংলাদেশে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীকে পূর্ণতা দিয়েছেন তিনি। তাঁর গল্পের ভাষা, বর্ণনা বা উপস্থাপনা কৌশলই শুধু নয়, বিষয়ের আরো গভীরে, মানবিক বোধসম্পন্ন ফিকশন লেখার মাধ্যমে
পাঠকদের তিনি উপলব্ধি করতে শিখিয়েছেন জন্মভূমি ও বিশ্বমানবতার প্রতি মানুষের
ভালোবাসা, মায়া-মমতার
কথা। তাঁর প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য
গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে_আকাশ
বাড়িয়ে দাও, দুঃস্বপ্নের
দ্বিতীয় প্রহর, সবুজ ভেলভেট, ক্যাম্প; বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী ও কিশোরদের জন্য লেখা_কপোট্রনিক সুখ দুঃখ, ট্রাইটেন একটি গ্রহের নাম, টুকুনজিল, ক্রুগো, ফিনিঙ্, অবনীল, হাতকাটা রবিন, দীপু নাম্বার টু, আমার বন্ধু রাশেদ প্রভৃতি। টেলিভিশনের জন্যও তিনি লিখেছেন অসাধারণ কিছু নাটক। তাঁর উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে
বেশ কিছু চলচ্চিত্র। সাহিত্যে
বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০০৪ সালে তিনি বাংলা একাডেমী পুরস্কার পান। তাঁর বড় ভাই হুমায়ূন আহমেদ
জনপ্রিয়তায় বাংলা ভাষার লেখকদের মধ্যে অদ্বিতীয়। বাংলাদেশের অন্যতম পাঠকপ্রিয় লেখক ও শিক্ষাবিদ মুহম্মদ জাফর
ইকবালের জন্মদিন আজ ২৩ ডিসেম্বর। ১৯৫২
সালের এই দিনে তিনি সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন। জন্মদিনে
তাঁর প্রতি রইল আমাদের গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।
তাঁর
উল্লেখযোগ্য বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী:
কপোট্রনিক
সুখ দুঃখ
ট্রাইটন একটি
গ্রহের নাম
যারা বায়োবট
টুকুনজিল
বিজ্ঞানী সফদর
আলীর মহা মহা আবিস্কার
নি:সঙ্গ গ্রহচারী
মহাকাশে মহাত্রাস
ওমিক্রমিক
রূপান্তর
ফোবিয়ানের
যাত্রী
বিজ্ঞানী অনিক
লুম্বা
বেজি
নয় নয় শূন্য
তিন
পৃ
অবনীল
ক্রোমিয়াম
অরণ্য
ক্রুগো
সিস্টেম এডিফাস
একজন অতিমানবী
ইরন
ফিনিক্স
অবনীল
ত্রাতুলের
জগৎ
মেতসিস
ত্রিনিত্রি
রাশিমালা
রুহান রুহান
জলমানব
অন্ধকারের
গ্রহ
প্রডিজি
কেপলার টুটুবি
শুভ জন্মদিন
ReplyDeleteঅভিনন্দন মুহম্মদ জাফর ইকবালকে, এবং শুভেচ্ছা আপনাকে।
ReplyDeleteপদ্ম পাতার শুভেচ্ছা
ReplyDeleteশ্রদ্ধেয় স্যারের জন্মদিনে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। স্যারের দীর্ঘায়ূ কামনা করছি। তিনি বেঁচে থাকুন অনেক অনেক বছর আর আলোকিত করে রাখুক আমাদেরকে।
ReplyDeleteআপনাকে ধন্যবাদ দিনটিকে মনে করিয়ে দেবার জন্য।
এই নষ্ট ব্যক্তিত্বের যুগে; উইকিলিকসের যুগে; যখন আর মানুষগুলোর শ্রেষ্ঠত্ব টিকে থাকে না; তখনও আমাদের সামনে একজন জাফর ইকবাল।
ReplyDeleteশুভেচ্ছা, শুভেচ্ছা, শুভেচ্ছা।
সঙ্গে শ্রদ্ধা ও ধন্যবাদ।
বাংলাদেশের অন্যতম পাঠকপ্রিয় লেখক ও শিক্ষাবিদ মুহম্মদ জাফর ইকবালের জন্মদিন আজ ২৩ ডিসেম্বর। ১৯৫২ সালের এই দিনে তিনি সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন। জন্মদিনে তাঁর প্রতি রইল আমাদের গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।
ReplyDelete